নিজস্ব প্রতিবেদক:: ইয়াবা ডিলার সানুর নেপথ্যে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার নগরীর উপশহরে! কিন্তু প্রশাসন আছে মিরব ভূমিকায়।
নগরের বিলাশ বহুল অভিজাত এলাকা উপশহর। আলিশান এলাকা বলেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিত্তবানদের বসবাস। এই উপশহরেই পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয়। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দফতরও ওই এলাকায়। ডিসি দক্ষিণ এর কার্যালয়ও পাশাপাশি।
অভিজাত এলাকায় নিরাপদে অপরাধ কর্ম হলেও অট্রালিকাসম ভবন কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বাসায় অপরাধীরা নিরাপদ বসতি মনে করেন। যেখান থেকে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালানো যায় নির্বিগ্নে।কতই না অপরাধ হয় লোকচক্ষুর অন্তরালে। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরও সিলেট নগরীতে হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা নামক নিষিদ্ধ ট্যাবলেট। মিয়ানমারে উৎপাদিত ইয়াবা যার অর্থ পাগলা ট্যাবলেট। নেশাজাতীয় জীবন ধ্বংসকারী এই ট্যাবলেট সিলেট শহরের পাড়া মহল্লায় এখন হাত বাড়ালেই মিলছে।
বিশেষকরে সিলেট নগরীর অভিজাত এলাকা শাহজালাল উপশহর এলাকার এইচ ব্লকের ১ নং রোড ও ৩ নং রোডে দিনে দুপুর এমনকি মধ্যরাত পর্যন্ত অবাদে চলে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় শাহজালাল উপশহর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় দির্ঘদিন থেকে পাইকারী ও খুচরা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে একটি মাদক কারবারি সিন্ডিকেট।
তবে মাজে মধ্যে পুলিশের অভিযানে চুনোপুঁটিকে আটক করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে মূল হোতা ইয়াবা ডিলাররা।
অনুসন্ধানে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকায় শীর্ষ পর্যায়ের এক মাদক ব্যবসায়ী ও তার সহযোগীদের নাম উঠে এসেছে।
স্থানীয় সূএে জানা যায়,সিলেট নগরের বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। খুচরা মাদক ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করে বিক্রি করে বলে জানা যায়। একাধিক মাদক মামলার আসামী মাদক সম্রাট সানু মিয়া জানু ,সিলেটে অপরাধ সামাজ্যের এক মহান পুরুষ।
বিয়ানীবাজারের বালিঙ্গা বাজারের মৃত আকদ্দছ আলীর ছেলে মো. সানু মিয়া ওরফে জানু মিয়া। তাহার বাড়ি সিলেটের বাহিরে হলেও নগরের উপশহর এলাকায় বাসা বাড়া নিয়ে সিলেট জুড়ে চালিয়ে যাচ্ছে তার অপরাধ কর্মকান্ড।
চাল চলনে ভদ্র বেশি সানু আহমদ’র পেশাই হলো ইয়াবা ব্যবসা।
কিছুদিন পূর্বে দিবাগত রাত ১১ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী জুই রেস্ট হাউজে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। হোটেলের ৪০২ নম্বর কক্ষে অভিযান চালিয়ে মাদক সম্রাট জানু মিয়া ও তার দুই সহযোগী মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ১১৬ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ।
শুধু ইয়াবা ব্যবসায়ী নয় সে ইয়াবার ডিলার হিসাবে ও পরিচিত। ইয়াবা সম্রাট সানু মিয়া জানু , নিজেই সিলেট নগরের উপশহর এলাকায় গড়ে তুলেছে এক ইয়াবা সিন্ডিকেট।
শাহজালাল উপশহর এইচ ব্লক সি ব্লক,ও আই ব্লক,
সিলেট নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, কালীঘাট, লামাবাজার, স্টেডিয়াম, আম্বরখানা, টিলাগড়, খাদিম পিরেরবাজার, দাসপাড়া, মেজটিলা এলাকায় খুচরা ইয়াবা বিক্রি করে আসছে সানু সিন্ডিকেট। আর সিন্ডিকেট দিয়ে ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। গোপন সূত্রে বেরিয়ে আসছে তার সিন্ডিকেটের কিছু নাম ঠিকানা। সরেজমিন অনুসন্ধানী রির্পোটে বেরিয়ে এসেছে নানা অপরাধ অপকর্মের খবর। তবে নগরের প্রত্যেকটা পাড়া-মহল্লায় ইয়াবার খুচরা বিক্রেতা হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। সানু সিন্ডিকেটের সদস্যরা বেশি লাভের আশায় ইয়াবা সেবনকারীদের হাতে ইয়াবা পৌঁছে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
নেশার বড়ি ইয়াবা পাচারের নতুন পথ হয়ে উঠেছে সিলেট সীমান্ত। জেলার জকিগঞ্জ ও বাল্লা সীমান্তের ওপারে (ভারতের অংশে) গড়ে উঠেছে ইয়াবা তৈরির ছোট ছোট কারখানা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, দুই দেশের সীমান্তে আগে যারা হেরোইন ও ফেনসিডিল আনা-নেওয়া করত, বেশি লাভের আশায় তারা এখন ইয়াবার কারবার করছে। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে স্থানীয় কিছু রাজনীতিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেরও যোগসাজশ রয়েছে।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত এলাকার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৪ কিলোমিটার। জকিগঞ্জ সীমান্তের উল্টো দিকে ভারতের করিমগঞ্জ ও শিলচর এলাকা। দুই দেশের সীমান্তের মধ্যে একটি ছোট নদী আছে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ওপার থেকে পলিথিন ব্যাগে ইয়াবা ভরে রশির সাহায্যে নদীতে ফেলে দেয়। এপার থেকে কারবারিরা সেটা তুলে নেয়। আর এখান থেকেই সুরু সারাদেশে ইয়াবা পাচার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ভারতের করিমগঞ্জের আবদুল্লাহপুরে ইয়াবার কারখানা রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে ইয়াবা ব্যবসায়ী জানু মিয়া সানুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি।