নিজস্ব প্রতিবেদক:: হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ থানাধীন বিরাট গ্রামে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অবশেষে ১০দিন পব মামলা রুজু করেছে আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশ। মামলার বাদী জজ মিয়া। সে আজমিরীগঞ্জ থানার বিরাট রাজারহাটি গ্রামের মৃত সাধু মিয়ার পুত্র। আজমিরীগঞ্জ থানার মামলা নং ০৮/৫০, তারিখ: ১৯/০৫/২০২৫ইং। দ:বি: ১৪৩/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩২৩/ ৩২৪/ ৩২৫/ ৩০৭/ ৩৭৯/ ৩৮০/ ৪৩৬/ ৩৫৪/ ৪২৭/ ১১৪/ ৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু করা হয়।
স্থানীয় সুত্র ও মামলার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘ বছর ধরে আওয়ামীলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা একটি বাহিনী তৈরী করে এলাকার নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় মানুষদেরকে নানাভাবে হয়রানী করে আসছে। সড়ক ও জনপথের পতিত জায়গায় ঘরবাড়ী তৈরী করে বসবাস করছেন জজ মিয়া। উক্ত জায়গা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন স্থানীয় ভুমিখেকো চক্রটি।
তারই জের ধরে গত ০৭/০৫/২০২৫ইং তারিখ বিকালে বিরাট গ্রামের জজ মিয়ার সাথে কৃষকলীগ সেক্রেটারী হুমায়ুন মিয়ার দ্বদ্ধ হয়। জজ মিয়ার ছেলে সাইফুল মিয়াকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেদরক মারপিট করে চুরা শামসু’র নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর চুরা, শওকত চুরা, নিজাম চুরা, মহসিন চুরা, মোজাম্মিল চুরা, জুবা চুরা গংরা হাঁসের খামার থেকে খাকি ক্যাম্বল জাতের ৫শতাধিক ডিম ওয়ালা হাঁস সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এ নিয়ে জজ মিয়া থানায় মামলা করতে গেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন শরস শালিসের মাধ্যমে খোয়া যাওয়া হাসগুলো উদ্ধারসহ বিষয়টি নিস্পত্তি করে দেয়ার আশ্বস্থ করলে জজ মিয়া থানায় মামলা দায়ের থেকে বিরত থাকেন।
বিষয়টির শালিস মিমাংসা না মেনে পরদিন অর্থাৎ ৯ মে ২০২৫ইং তারিখে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সাধারন সম্পাদক মো: লোকমান মিয়ার নির্দেশে তারই বড় ভাই আজমিরীগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন মিয়ার নেতৃত্বে বিরাট গ্রামে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে লুটতরাজসহ সার্বিক আইনশৃংখলা ভঙ্গের উদ্দেশ্যে গত ৯ মে দুপুর অনুমান ২ঘটিকায় বিরাট গ্রামের জজ মিয়ার বাড়ীসহ আরও ৮টি বসতবাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে অন্তত ১৫জনকে আহত করে।
স্থানীয় গ্রামবাসী তাদের বাধা দিলে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষদের নগদ অর্থ, স্বর্নলংকার, আসবাপত্র, ঘরের ছালাসহ যাবতীয় মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় জজ মিয়ার বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় অন্তত ২ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করে। ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে জজ মিয়ার দোকান পাঠ, বসতবাড়ী, জুয়েল মিয়ার দোকান পাঠসহ বসতবাড়ী, টেনু মিয়ার বাড়ী, সাইফুল মিয়ার বাড়ী, কুদ্দুছ মিয়ার বাড়ীসহ আরও অনেকের বাড়ীঘর লুটপাট ও ভাংচুর করিয়া সব নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় জজ মিয়া, সাইফুল মিয়া, টেনু মিয়া, সুহেল মিয়া, আমজদ মিয়া, রিপন মিয়া,গিয়াস উদ্দিন,তাজ্জতনেছা, কামরান মিয়া, সুলেনা বিবি, আপ্তাননেছা ও শাহারা বিবিসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মো: লোকমান মিয়াকে হুকুমের আসামীসহ ৮৩জনের নাম উল্লেখ করে মামলা রুজু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য গেল ১৭ মে আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে উদ্ভুদ পরিস্থিতি নিস্পত্তি করতে গেলে শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কৃষকলীগ নেতা হুমায়ুন গংরা মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে রাজার গোষ্ঠী, র নাম ধরে শত শত মানুষের সামনেই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জজ মিয়াসহ অন্যান্যদের উপর আবারও আক্রমন করে রক্তাক্ত জখম করে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, ১৯৮৬ সালে নোয়াবন্দ বাশাহাটিয়া,হাশামপুর গোচর রক্ষা কমিটির সেক্রেটারীর নাম ধরে সন্ত্রাসী কায়দায় হবিগন্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মরহুম মহিবুর রহমান গং দের পৈত্রিক সম্পত্তির থেকে শত শত একর জমির কয়েক হাজার মন পাকা ধান কেটে নিয়ে যায় গোচর কমিটি! এতেও থেমে থাকেনি কথিত গো চর কমিটি ভুক্ত ভোগীদের একঘরে করে তাদের কাছ থেকে কমিটির নামে জোরপূর্বক দলিল করে নিয়ে যায়। সম্পদহীন করেছে অনেক নিরীহ কৃষক পরিবারকে।
আজমিরীগঞ্জে ভুমিখেকো চক্র গোচর রক্ষা কমিটির নামে কৃষকদের নিয়ে তামাশা করছে। আর এসব বিষয়াদি নিয়েই এলাকার নিরীহ মানুষদের মাঝে প্রভাবশালীদের দ্বন্ধ চলে আসছে। গোচারণ রক্ষা কমিটির নাম করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে সেক্রেটারী ইসমাইল হোসন শরস ও হুমায়ুন মিয়া গংরা।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী জজ মিয়া জানান, আমি ন্যায় বিচারের জন্য আজমিরীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমার যাবতীয় সহায় সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদেরকে বার বার মারপিট করছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। শুনেছি যারা আমাদের বাড়ীঘর ভাংচুর লুটপাট করেছে তারাও নাকি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিচ্ছে। প্রয়োজনে আমাকে কিংবা আমার রাজার গোষ্টীর এমন কি আমার পরিবারের কোন সদস্যকে সুযোগমত পাইলে প্রাণে হত্যা করিয়া লাশ ঘুম করিয়া ফেলবেও বলে এলাকায় প্রচার করছে। আমি অতি দুংখের সাথে জানাচ্ছি যে ১৭ তারিখ বিচার আমার বাড়ীঘর পূর্বে ন্যায় গোচর কমিটির সেক্রেটারী ইসমাইল হোসেন শরস আমাকে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে ওসি শালিস কারীদের সামনেই আমাকে হত্যার উদ্দেেশ্য মারধোর করে আমি আমার গোষ্ঠীর সবাই ন্যায় বিচার চাই।
আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শফিকুল ইসলাম মামলা রুজুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। আইনশৃংখলার অবনতি ঘটানোর কু উদ্দেশ্যেই বিরাট গ্রামে এ ধরনের হামলা ভাংচুর লুটপাট চালানো হয়েছে। বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করছি।