নিজস্ব প্রতিবেদক:: গত ২৩ মে সিলেটের জনপ্রিয় স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক সিলেটের ডাক পত্রিকায় নগরীতে ৬টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেওয়ার নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেই নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে নাম নেই জেলা প্রশাসক কর্তৃক অনুমোদন পাওয়া পারাইরচক দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা এই মাঠটির। তাই সচেতন মহলে গুঞ্জন ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা গোপন আতাতে অবৈধ সুবিধায় লিজ দেওয়া হয়েছে, এইজন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গাটি অন্তর্ভূক্ত হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানাযায় পারাইরচক দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল ২ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে আনিকা এন্টার প্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।তাদেরকে বিনা নিলামে অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিসিকের বিরুদ্ধে।
এব্যপারে জানতে সিলেট ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমরা লিজ আনিনি তবে এর আগে একটানা ৪ বছর লিজ এনেছিলাম। বর্তমান লিজ গ্রহিতা আনিকা এন্টার প্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন আপনারা এখন পশুর হাট নিয়ে লিখতে চান। অথচ ট্রাক কেন যায়না সেই বিষয় নিয়ে আপনারা লিখেননা। যদি লস হয় তাহলে আপনারা লিজ কেন নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি এর কোন উত্তর না দিয়ে কৌশলে এরিয়ে যান। তিনি আরো বলেন আপনারা লিখেন সিটি করপোরেশন এলাকায় কোন ট্রাক ঢুকলেই টার্মিনালে না গেলেও ১৫০/ টাকা টোল দিতে হবে এই নীতি চালু হলে ইজারাদার বাঁচবে। ইজারাদারের লস বাঁচাতে নামমাত্র মুল্যে সিসিক কর্তৃপক্ষ ট্রাক টামিনাল ইজারাদারকে অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দিয়েছে সিসিক।
ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে নুরুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতি বছর দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল বিনা নিলামে সিসিক কর্তৃপক্ষকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অস্থায়ী পশুর হাট বসিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে সকল বড় বড় নেতা আত্নগোপনে চলেযান। অথচ সিলেটের নুরুল ইসলাম এখনও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আনিকা এন্টার প্রাইজ এর নামে আবারও দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনালে অস্থায়ী পশুরহাট গোপন আতাত ও অবৈধ সুবিধায় ভাগিয়ে নিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এব্যপারে জানতে সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মানবাদিকারকর্মী তালাশ টিভি ডট লাইভ এর সম্পাদক ও প্রকাশক কামরুল হাসান জুলহাস এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গার কথা বলা হয়েছে, যদি সেখানে খালি জায়গা না থাকে তাহলে এই জায়গাটি কেনো বেঁচে নেয়া হলো সেটি একটি প্রশ্ন? নতুবা নিলাম দেয়া হলে যারা ইজারা পাবে তারা ট্রাক টার্মিনাল ইজারাদারদের সাথে নিয়ে আপুষে পশুরহাট বসাতে পারতেন। তখন অবৈধ সুবিধা বা গোপন আতাত নিয়ে দূর্ণীতির অভিযোগ উঠতোনা। সিসিক কর্তৃপক্ষ নিজেরা ফেঁসেগেছে, তারা দূর্ণীতির দায় এড়াতে পারেননা।
এব্যপারে জানতে সিলেট সিটিকর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন প্রতি বছর যেভাবে লিজ দেওয়া হয় ১০% হিসেবে, এবছরও সেভাবেই দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায় আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সুবিধাবাদী নুরুল ইসলাম বিএনপির কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্যপদ লাভ করেছেন। এখন তিনি বিএনপির বড় নেতা হিসেবে পরিচিত।
উল্লেখ্য সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্হানীয় সরকার শাখা থেকে ১৮ টি শর্তে নগরীর ৭স্হানে অস্হায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৮ মে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরীতে ১২টি অস্হায়ী গরুর হাটের অনুমোদনের চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়।
দীর্ঘ যাচাই বাচাই ও নিয়ম নীতি পর্যালোচনা করে বুধবার (২১ মে) সিলেট জেলা প্রশাসকের স্হানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক (উপসচিব) সুবর্ণা সরকার স্বাক্ষরিত ০৫.৪৬.৯১০০.০০০.০০৯.৩৬০০০১.২৫.৩২৮
নং স্বারকে অনুমোদন সংক্রান্ত একটি চিটি সিলেট সিটি কর্পোরেশন বরাবরে পাঠানো হয়েছে।
এতে নগরীর ৭টি স্হানে কোরবানীর ঈদ উপলক্ষ্যে অস্হায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়। সেই সাথে দেয়া হয় ১৮টি শর্ত।
অনুমোদন দেয়া হাটগুলো হচ্ছে:-
১। দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা। ২। আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরাপাড়া। ৩। তেমুখী (টুকের বাজার) পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা। ৪। মাছিমপুরস্থ কয়েদির মাঠের (পার্শ্বস্থ) খালি জায়গা। ৫। মেজরটিলা বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা। ৬। টিলাগড় পয়েন্ট সংলগ্ন আম্বরখানা রোড এর খালি জায়গা। ৭। শাহপরান (রহ:) বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা।
আবেদনে সিসিক থেকে যেসব হাটের অনুমোদন চাওয়া হয়:-
১। দক্ষিণ সুরমা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা। ২। আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরাপাড়া। ৩। তেমুখী (টুকের বাজার) পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা। ৪। মাছিমপুরস্থ কয়েদির মাঠের (পার্শ্বস্থ) খালি জায়গা। ৫। মেজরটিলা বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা। ৬। টিলাগড় পয়েন্ট সংলগ্ন আম্বরখানা রোড এর খালি জায়গা। ৭। শাহপরান (রহ:) বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা। ৮। ঝালোপাড়া মসজিদ সংলগ্ন খালি জায়গা। ৯। আখালিয়া মদিনা মার্কেট নবাবী মসজিদ সংলগ্ন খালি জায়গা। ১০। সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গা (কাজির বাজার ব্রীজের নীচ বাবনা পয়েন্ট হতে গোপশহর রোড), বরইকান্দি। ১১। পাঠানটুলা পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা। ১২। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন এস ফল্ট মাঠ, তেতলী।