নিজস্ব প্রতিবেদক :: আজমিরীগঞ্জের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলা ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রাণপণ চেষ্টায় লিপ্ত আছেন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন সরশ। আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ডেভিল হান্টের অভিযানে এখন পর্যন্ত কোন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী।

জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন সরশের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ডেভিল হান্ট অপারেশন ও মামলার আসামীদের বাচাঁতে মরিয়া হয়ে উঠছেন, শুধু তাইনা আওয়ামী ডেবিল পূর্নবাসন করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি আজমিরীগঞ্জ থানার বিরাট গ্রামে ৮টি বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাথে জড়িত উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো: লোকমান মিয়া, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন মিয়াসহ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের রক্ষার জন্য ইসমাইল হোসেন সরস উপজেলা ও জেলা বিএনপি’র অনেক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন এবং তাদের রক্ষার্থে মরিয়া হয়ে উঠেন। অথচ এই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিগত ১৬ বছর উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের শত শত নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা হামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। উল্লেখ্য যে, গত ৫ আগষ্ট দুপুর বেলা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বাবলু রায়ের বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট করা হয় বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের নেতৃত্বে। ঐ সময় বিপুল পরিমাণ সোনা গহনা ও নগদ টাকা পয়সা ও ঘরে থাকা যাবতীয় আসবাবপত্র লুট করে নেয়া হয়। এ ছাড়াও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সনাতনধর্মের লোকজন চরম আতংকে দিনাতিপাত করছে ইসমাইল হোসেন সরসের ভয়ে। অনেকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। গেল ৮ মে বিরাট গ্রামে হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ইসমাইল হোসেন সরসের ইন্দন ছিল বলেও জানা যায়। সেই ঘটনাকে আপোষে নিস্পত্তি করতে স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একটি শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হলেও ইসমাইল হোসেন সরসের উস্কানি ও কুটচালের কারণে শালিস বৈঠকটি ভেস্তে যায় এবং শালিস বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিগনের সম্মুখে ইসমাইল হোসেন সরসহ তার সহযোগি লোকজন অন্যপক্ষের জজ মিয়াসহ সবার উপর হামলা চালিয়ে জজ মিয়াসহ কয়েকজনকে গুরুতর জখম করে। এ সময় উপজেলা বিএনপি নেতা খালেদুর রশিদ ঝলকের শক্তিশালী ভুমিকার কারণে গুরুতর আহত জজ মিয়ার মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পায়।

এ ঘটনায় ইসমাইল হোসেন সরশসহ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লোকমান মিয়া, কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন মিয়াসহ ২৫/২৬ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর আহত জজ মিয়া আজমিরীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের বাধার মুখে মামলাটি রুজু করা হয়নি। এমনকি আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বাদীকে জানিয়েছেন যে. বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের নাম বাদ দিয়ে নিয়ে আসলে মামলাটি রুজু করা হবে। মামলার বাদীসহ গ্রামের শতাধিক নিরীহ পরিবার শরস মিয়ার কারণে চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী গুরুতর আহত জজ মিয়া জানান, গেল ১৭টি বছর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদের গ্রামের নিরীহ মানুষদের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল কিন্তু ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও আওয়ামীলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের নেতৃত্বে আবারও আমাদের বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পরও বহাল তবিয়তে রয়েছে। আমার একটি মামরা রুজু করা হলেও বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের কারণে কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বার বার তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। শালিস বৈঠকের সম্মুখে আমাকে জবাই করার চেস্টা করেছে। বিএনপি নেতা খালেদুর রশিদ ঝলক না থাকলে আমাকে প্রাণে খুন করিয়া ফেলত। আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার মামলার কিছু আসামী আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েই আমার ভাই টেনু মিয়ার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে টেনু মিয়ার স্ত্রীর হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। সেটারও অভিযোগ দায়ের করেছি কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত মামলাটি আমলে নেয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করে হয়রানী করার চেস্টা করছে। আমাদের উপর যে মিথ্যা মামলাটি রুজু করেছে সেটার ১নং আসামী উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ওলিউর মিয়া ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আজমুল হোসেনকে আসামী করা হয়েছে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী হুমায়ুন কবির জানান, আমাদের বিরাট গ্রামে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা ৮টি বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঐ মামলার আসামী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক লোকমান মিয়া ও কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন মিয়াকে বাচাঁতে উপজেলা বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরস আমি সহ মামলার বাদী জজ মিয়াকে আওয়ামীলীগের ভেবিল বানানোর চেস্টা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে আমার মান সম্মান হানি ঘটানোর চেস্টা করেছে।

এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা: আব্দুল হাই জানান, গত ১৭ মে বিরাট গ্রামে বিদ্যমান সহিংসতা নিস্পত্তির লক্ষ্যে আমার সভাপতিত্বে শালিস বৈঠক অনুষ্টিত হয়। উক্ত বৈঠকে শান্তিপুর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ভুমিকা নেয়ার পরও একটি কুচক্রি মহলের ইন্দনে শান্তিপূর্ন বিষয়টি অশান্তিতে পরিনত হয়। শালিস বৈঠকে উপস্থিত শালিস ব্যক্তিদের সম্মুখে জজ মিয়াকে ব্যাপকভাবে মারপিটের ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। যা আজমিরীগঞ্জের ইতিহাসে শালিস বৈঠকে কাউকে মারধোরের বিষযটি নজির বিহীন ঘটনা।

এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। কি কারণে মামলা নেয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেন সরসের নাম দেয়ায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি। সরসের নাম বাদ দেয়ার জন্য বিএনপি’র উপর থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে।