ফারুক মিয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন নরসিংপুর ইউনিয়নে চেলা নদীর পাড়ের ফসলি জমি খনন করে জোরপূর্বক বালু বিক্রি বন্ধে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে দোয়ারাবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় দোয়ারাবাজার থানায় লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মৃত আবু বকর সিদ্দিকের পুত্র আব্দুল হান্নান (৬০) ও মৃত মতিউর রহমানের পুত্র আব্দুস সাত্তার (৪৫)।
এতে অভিযুক্তরা হলেন, ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোনাপুর গ্রামের মৃত জামির আলী’র পুত্র ধন মিয়া (৫৯), তার ভাতিজা ও মৃত সূরত আলী’র পুত্র সাদ্দাম হোসেন (৩৫), সম্রাট হোসেন (২৮), মৃত চকম আলীর পুত্র নরসিংপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান বুস(৩০).হবুল মিয়া (৪০)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,অভিযোগকারীরা দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত চেলানদীর তীরবর্তী সোনাপুর গ্রামে বসতঘর করে বসবাস করে আসছেন। আজ থেকে ৮-১০ দিন পূর্বে অভিযুক্তগণ বাদীর দখলীকৃত ফসলী জমি জোরপূর্বক দখল করে জমি খনন করে প্রতিদিন অর্ধশত স্টিলবডি নৌকা ও ট্রলি গাড়ি দিয়ে বালু লুটপাট করে নিচ্ছে। এবিষয়ে বাদী এবং স্থানীয়রা অভিযুক্তদের একাধিকবার বাঁধা নিষেধ করলে তারা উল্টো মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখানোসহ প্রানে মারার হুমকি দেয় এবং বলে আমরা বালু নিব,তুমরার যায় খুশি করো গিয়া। এবিষয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার গ্রাম্য বিচার শালিসে বসতে চাইলে ইউপি সদস্য ধন মিয়া ও তার আত্মীয় স্বজনরা উগ্রতা দেখিয়ে বিচার শালিসে বসতে চায়না।
স্থানীয়রা জানায়, ইউপি সদস্য ধন মিয়া (৫৯) বিগত দিনে আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং তার ভাতিজা নরসিংপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা জিয়াউর রহমান (৩০) এলাকায় সবসময় পারিবারিক আধিপত্যের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে চলে। অভিযুক্ত অন্যান্যদেরকেও এলাকার মানুষ তাদের পারিবারিক প্রভাবের কারনে ভয়ে কেউ বিরোধীতা করতে চায়না। তারা খুবই উগ্রবাদী ধাঙ্গা প্রকৃতির লোক। বাদী (অভিযোগকারী)’র ফসলি জমি খনন করে আজ ১০-১২ দিন যাবত বালু উত্তোলন ও লুট করে নেওয়ায় সামাজিক বিচার শালিস ডাকলেও অভিযুক্তরা কাউকে পরোয়া করেন নি। এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য বৈঠকের ডাকে আসেনি অভিযুক্তরা।
সোনাপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান জানান, ধন মিয়া বিগত দিনে আওয়ামীলীগ করেছেন,তার ভাতিজা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য। তাদের দলীয় সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলেও তাদের প্রভাবে এখনো গ্রামের মানুষ তাদের এড়িয়ে চলে। তাদের পরিবার বড়,আত্মীয়স্বজন বেশি। তাই তাদেরকে মানুষ ভয় পায়। বিগত কয়েকদিন যাবত সোনারপুর গ্রামের পূর্বপাশে ফসলি জমি হতে জোরপূর্বক অর্ধকোটি টাকার বালু লুট করে নিয়েছে। একাধিকবার বাঁধা নিষেধ করেছি তাতে আরও বেপরোয়া হয়েছে তারা। গ্রামবাসীর ডাকে ও আসনি। আমাদেরকে মামলা -হামলার হুমকি দিচ্ছে প্রতিনয়তো।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক জানান,অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।