নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় কয়েক কোটি টাকার জমি নামমাত্র মূল্যে হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা ভূমিখেকো সিন্ডিকেটের, রেজিস্টারি না করতে দক্ষিণ সুরমা সাব-রেজিস্টারের কাছে এক ভূক্তভোগী অভিযোগ
দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বড়ই কান্দি এলাকার সুনামপুর গ্রামের মৃত জয়নুল মিয়ার মেয়ে মেহেরজান বেগম তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাহার ভাইদের মাদক সেবনের অভ্যাস আছে, বিশেষ করে গাজা খাবার অভ্যাস। এই এলাকায় যারা বসবাস করছে বেশীরভাগ তাদের আত্নীয় স্বজন। তিনি বলেন তাহার ভাইদের নাম গিয়াস উদ্দিন, আলম উদ্দিন, আলিম উদ্দিন ও ডালিম উদ্দিন ।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন ফয়সল মিয়া, পিতা- ইন্তাজ আলী, অপু মিয়া, পিতা- নানু মিয়া, মোহরী পরিচয় দানকারী দালাল কুতুব উদ্দিন, পিতা-আফরোজ মিয়া, আনোয়ার, পিতা-অজ্ঞাত, সাং বড়ইকান্দি, থানা- দক্ষিণ সুরমা, জেলা- সিলেট। সবাই ভূমিখেকো চক্রের সিন্ডিকেট।
এই ভূমিখেকো সিন্ডিকেট চক্র ভূক্তভোগী ভাইদের মাদক সেবনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, মাদকের টাকা দিয়ে ফুসলিয়ে ভূক্তভোগীর অগোচরে গোপনে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি নামমাত্র মূল্যে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই জমির সরকারী বাজার মূল্য আনুমানিক প্রতি ডিসিমিল ৭ (সাত) লক্ষ টাকা। ২০১৫ সালে এই জমির পাশের জমিটি বিক্রি হয়োছে প্রতি ডিসিমিল সাড়ে ৬ (ছয়) লক্ষ টাকা। অথচ ১০ বছর পর একই স্থানের জমি ২০ ফুট পাকা রাস্তার সাথে সিসিক’র ২৮ নং ওয়ার্ডের এই ৯০ ডিসিমিল জমি, মাত্র দেড় লক্ষ টাকা ডিসিমিল সাব্যস্ত করে ভূমিখেকো সিন্ডিকেট চক্রটি ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় নেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই চক্রটি ভূক্তভোগীদের না জানিয়ে অতি গোপনে রেজিস্টারি করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ভূক্তভোগীরা বিপদে পড়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য ৮ ডিসিমিল জমি সকল ভাইবোন মিলে বিক্রি করতে চাইলে ঐ ভূমিখেকো সিন্ডিকেট তাদের অসুস্থতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জিম্মি করে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ডিসিমিল সাব্যস্ত করে ২০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় খরিদ করে নিয়ে যায়, তখন ভূক্তভোগী রেজিস্টারি করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আরো দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কমিশনে রেজিস্টারি করে। কিন্তু রেজিস্টারি করার পর কিছুদিন টাকা দিবে দিচ্ছি বলে কয়েকবার সময় নিয়ে পরে দিবেনা বলে পরিস্কার জানিয়ে দেয়। এই জমিতে ভূক্তভোগীদের পাশাপাশি সরকারও বহু টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এই সিন্ডিকেট চক্রের ভূমিখেকোরা এখন ৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার জমি মাত্র ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় নিতে ভূক্তভোগীদের পরিবারে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। ভূমিখেকোরা একদিকে ভূক্তভোগীদের প্রায় ৫ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে নিতে চাচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের ৭৫ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিতে চায়। শুধু তাইনা ভূক্তভোগীদের পরিবারে বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে বড়ধরণের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। যেহেতু ভূক্তভোগীদের ভাইয়েরা মাদকাসক্ত তাই দূর্ঘটনা হবেনা একথা বলা যায়না।
সাব-রেজিস্টারি অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পূর্বে ভূক্তভোগী স্থানীয় বড়ইকান্দি এলাকার সুনামপুর কাজিরখলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোতওয়ল্লিকে এবং তাহার সকল আত্নীয়স্বজনকে অবগত করলে। তারা ভূমিখেকোদের ডেকে জমি খরিদ করতে নিষেধ করেন। কিন্তুু ভূমিখেকোরা তাদের নিষেধ অমান্য করে ভূক্তভোগীর মাদকাসক্ত ভাইদের মাদকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে অতি গোপনে জমি কিনে নিতে চায়। বিষয়টি লোকমূখে শুনতে পেয়ে কোন পথ না পেয়ে দক্ষিণ সুরমা সাব- রেজিস্টারের কাছে দলিল সম্পাদন না করতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নিন্মে জমির মৌজা ও দাগ খতিয়াত দেওয়া হলো।
জেলা- সিলেট, উপজেলা-দক্ষিণ সুরমা মৌজা – বড়ইকান্দি, জেএল এ-১১৬, বি এস-৬, খতিয়ান নং-এস এ ছাপা-১৩২, বিএস ছাপা-৫৩৮, দাগ নং-এস এ ১৭০৮,বি এস ৪৩২৫। এছাড়াও ভূক্তভোগীদের আরো অন্যান্য দাগে যাতে কোন রকম দলিল সম্পাদন না হয় সেই বিষয়টিও নজরে রাখতে অনুরোধ করেন।