
স্মরন সিং,জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার::
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে “চা শ্রমিক এক হও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত কর ” প্রতিপাদ্য বিষয়ে অবিলম্বে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন বি-৭৭ এর সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে চা শ্রমিকের গণতান্ত্রিক ভোটারধিকার পুনরুদ্ধারের দাবীতে সর্বস্তরের চা শ্রমিক ও ছাত্র যুবক প্রতিনিধিবৃন্দ একত্রে শ্রীমঙ্গল চৌমূহনা ও শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরে সম্মুখ প্রান্তে সকাল ১১:৩০ ঘটিকা হইতে দুপুর ১২:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত মানববন্ধন ও বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন শ্রীমঙ্গল বরাবর লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
কানিহাটি চা বাগানের চা শ্রমিক যুব সৌরভ বীন বলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন বিগত ৭ ( সাত)বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। এই ৭( সাত) বছরের দুইটি নির্বাচন হওয়ার কথা। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন না হওয়ায় চা বাগানে বাগান পঞ্চায়েত কমিটি গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে বা বাতিল করে এডহক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ফলে চা বাগানে চা শ্রমিক এর জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের অধিকারসহ নানান বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টির দেখা দিচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনে জোর দাবী জানাচ্ছি।
মৌলভী চা বাগানে ছাত্রযুব প্রতিনিধি রনি মিয়া বলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক (বি-৭৭) নির্বাচন না হওয়ায় চা বাগানে বিশৃঙ্খলা, অস্থিরতা, নাস্তানাবুদ সৃষ্টি হচ্ছে। চা বাগানে বিচার, সালিশ, অন্যান্য বিষয়ে পঞ্চায়েত কমিটির মতামত কেউও মানছে না। এডহক কমিটির নেতৃত্বও গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। ফলে চা বাগান ম্যানেজমেন্টের সাথে কোন বিষয়ে বা বাগান মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে কোন ইস্যু নিয়ে কথা বলা যাচ্ছে না। কারণ, বর্তমানে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন না হওয়ায় তারা অবৈধ কমিটি বলে চা বাগানে নৈরাজ্য, অরাজকতা বিরাজ করতেছে।
দেওরাছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক প্রতিনিধি অনুরাগ কর্মকার বলেন চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বি-৭৭) নির্বাচনের জন্য চা শ্রমিক ও ছাত্রযুব একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করেছি। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ( লেবার হাউজে) যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা আমাদের অভিভাবক। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটি মেয়াদত্তীর্ণ ও নির্বাচন না হওয়ায় চা বাগানে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। চা শ্রমিক সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপন করতে পারে তার জন্য অনতি বিলম্বে নির্বাচন জরুরী।
রাজঘাট চা বাগানের চা শ্রমিক পরিমল বলেন চা বাগানে বিভিন্ন সমস্যা,নির্বাচন না হলে সমস্যা নিরসন হবে না।
শমসেরনগর চা বাগান গোপাল যাদব বলেন নির্বাচনে সুষ্ঠু নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক নিয়ম নাই। পাতানো নির্বাচন,গঠণতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি আরও বলেন আগামীতে কঠোর মানববন্ধন করবে বলে জানান।
লোহায়নি চা বাগান কামরুল বক্স বলেন চা শ্রমিক অবহেলিত নির্যাতিত । চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তারা মালিকপক্ষের গোলামি করে। লজ্জা শরম নেই। ১৫ টাকা হারে মাসিক চাঁদা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মানববন্ধনে জনক লাল দেশোয়ারা জনির সঞ্চালনায় কেজুরীছড়া চা বাগান অমর গোয়ালা, ডালিম, শমসেরনগর চা বাগান লছমী রাণী রাজভর, মাক্রিছড়া চা বাগানের সুমন অলমিক, রাজনগর চা বাগানের চন্দন গৌড়, বুরবুরিয়া চা বাগানের আকাশ দোষাদ, ফুলছড়া চা বাগানের বিষু প্রসাদ গোয়ালা, চাম্পারায় চা বাগানের বাংলাদেশ নারী চা শ্রমিক ফোরাম নেত্রী গীতা রাণী কানুসহ প্রমুখ চা শ্রমিক ও ছাত্রযুব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মহব্বত হোসাইন জানান নির্বাচন কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩৮টি চা বাগানের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ২৫ লক্ষ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালকের মাধ্যমে পত্র দেওয়া হয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকা সংগ্রহের জন্য কমিটি গঠণ করা হয়েছে।