হাসান জুলহাস:: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার গুয়াবাড়ি বাইরা এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা — ফখরুল মেম্বার ও সেলিম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন এবং প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায় করছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিদিন শত শত ট্রাকে করে বালু বহন করা হয়, আর প্রত্যেক গাড়ি থেকে ১৩০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এই চাঁদার টাকাও যাচ্ছে সরাসরি ফখরুল ও সেলিমের পকেটে। অভিযোগ রয়েছে, এ কাজে প্রশাসনের কিছু অসাধু সদস্যের নামও ব্যবহার করা হয় যাতে কেউ প্রতিবাদ না করে।
শতাধিক গাড়ী থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত, যাহা মাস শেষে ৩৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এই বিশাল অংকের টাকা অপরাধীরা ভাগবাটোয়ারা করে হাতিয়ে নিচ্ছে।
একজন পরিবহন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা চাইলেও কিছু বলতে পারি না। বাধা দিলে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়, ভয় দেখানো হয়। বাধ্য হয়ে টাকা দেই।”
এব্যপারে জানতে আওয়ামিলীগ নেতা ফখরুল মেম্বারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন আমি এসব কিছুই জানিনা, আমি জনপ্রতিনিধি তাই আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন সেলিম নামের এক ব্যক্তি জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে অকশন এনেছেন।
অবৈধ বালি উত্তোলন বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার ভূমি জৈন্তাপুর এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন, আমি বালি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়েছি, আবহাওয়া খারাপ থাকায় স্পটে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া ভালো হলে অবশ্যই অভিযানে যাবো।
এ ব্যপারে জানতে জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন, গুয়াবাড়ি বাইরায় অবৈধ বালু উত্তোলন বিষয়ে আমার জানা নেই। একজন এস আই আপনার নামে টাকা নিচ্ছে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এব্যপারে জানতে সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী এভাবে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন এসিল্যান্ড ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এসব বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।