এম এ এইচ শাহীন(স্টাফ রিপোর্টার):: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে (আশই) কে ভূয়া সাজিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল ও রাষ্ট্রিয় সম্মানী ভাতা আত্মসাৎ এর অভিযোগ ওঠেছে ছোট ভাই গ্রাম্য উজা, ওয়ারিছ আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনার অনুসন্ধানে জানাযায়, ৫নং উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বেকিমুড়ারপাড়, গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে আশক আলী ওরপে আশই মিয়া। পিতা আঃ রহমান,ডাকঘর রণিখাই কামালবস্তি, মুক্তিযোদ্ধা নম্বর- ০১৯১০ ০০৬১১৭, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-৫০১০ ৮০২০৪, বেসামরিক গেজেট নম্বর-২০৫২, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমন্বিত তালিকা কোম্পানীগঞ্জ ক্রমিক নং-৩৬৩, বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই তালিকায় ক্রমিক নং-২২৮, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা ওয়ারি তালিকা কোম্পানীগঞ্জ ক্রমিক নং-২২৮। বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলীর আদি নিবাস,গ্রামের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার ৭ নং মোগলগাঁও ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের গালমশাহ নামক গ্রামে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে ওয়াছির আলীর পিতা মৃত আব্দুর রহমান গালমশাহ ছেড়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রনিখাই ইউনিয়নের বেকিমুড়ারপাড় গ্রামে বসবাস করেন। আর ও জানা যায় ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে আশক আলী আশই, তাহার আপন ফুফাতো বোন খয়রুন নেছার, সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ও খয়রুন নেছা দম্পত্তির ঔরসে একমাত্র কন্যা সন্তান জফুরা বেগম জন্ম গ্রহন করেন।জফুরা বেগমের জন্মের ৪-৫ মাসের মধ্যেই ওয়াছির আলী মৃত্যু বরণ করেন। স্ত্রী খয়রুন নেছা ও মেয়ে জফুরা বেগম। ও ৪ ভাই যথাক্রমে আয়াশ আলী, ওয়ারিছ আলী, রইছ আলী ও সিরাজ আলী ও ৩ বোন যথাক্রমে সমরুন বিবি, আছিয়া বিবি, রাবিয়া বিবি, কে রেখে যান। উল্লেখ্য যে ভাই আয়াশ আলী কিশোর অবস্থায় মারা যান। গ্রাম্য উজা ওয়ারিছ আলী,আপন বড় ভাইয়ের বউ খয়রুন নেছাকে বিবাহ করতে চাইলে তিনি এতে অসম্মতি প্রকাশ করে।
বেকিমুড়ারপার গ্রাম থেকে একমাত্র মেয়ে জফুরা বেগম কে নিয়ে নিজ পৈত্রিক নিবাস গালমশাহ গ্রামে চলে যান। সেখানে পারিবারিক ভাবে এক সন্তানের জননী খয়রুন নেছা কে দ্বিতীয় বার গালমশাহ গ্রামের হুছন আলীর নিকট বিবাহ দেন।এতে ছোট্র জফুরা বেগম নানীর কাছেই লালিত পালিত হয়ে থাকেন মা খয়রুন নেছা ও নানীর প্রচেষ্টায় হুছন আলীর প্রথম সংসারের ছেলে ছমির উদ্দিনের কাছে মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে আশই মিয়ার একমাত্র উত্তরাধিকারী কন্যা জফুরা বেগম,কে- ২৬-১২-১৯৯৪ ইং তারিখে বিবাহ দেন। পিতাহিন অনাথ দরিদ্র জফুরা বেগমের জীবন এভাবেই চলতে থাকে। এদিকে ২০০৫ সালে যখন মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রিয় সম্মানী ভাতা দেওয়া শুরু হয়। তখন চালাক গ্রাম্য উজা চাচা ওয়ারিছ আলী কোম্পানীগঞ্জ থেকে তারই ভাতিজিকে কোন তথ্য বা খবর না জানিয়ে বড় ভাইয়ের নামীয় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের পায়তারা করতে থাকেন।কোন মুক্তিযোদ্ধা তখন স্বাক্ষী না দেওয়াতে তার এই অশুভ উদ্দেশ্য তখন হাসিল হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে আশক আলী আশই মিয়ার একমাত্র উত্তরাধিকারী জফুরা বেগমকে বঞ্চিত করে সেই ভাতা ভোগ করতে উদ্যত হলে তখন উক্ত খবর গালমশাহ গ্রামে জফুরা বেগমের নিকট পৌছালে, ২০১৪ সাল থেকে জফুরা বেগমই, ওয়াছির আলীর উত্তররধিকারী হিসাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এদিকে গ্রাম্য উজা,লোভী, ওয়ারিছ আলী ২০১৭ সালে তৎকালীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল লাইছ বরাবরে অভিযোগ দরখাস্ত দাখিল করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল লাইছ ২৯ মে ২০১৭ইং তারিখের স্মারক নং-০৫.৬০.৯১২৭.০১১.৪১.০০৭.১৬-৪৭২ (২) একটি নোটিশের মাধ্যমে বীর কন্যা জফুরা বেগমকে অবহিত করলে নোটিশ মোতাবেক নির্দিষ্ট দিনে তিনি উপস্থিত হন একটি শুনানী হয় এবং জফুরা বেগমকেই মুক্তিযোদ্ধার ভাতা প্রদান করার ব্যবস্থা চলমান রাখেন। জফুরা বেগমের জন্ম নিবন্ধন কপিতে পিতা ওয়াছির আলী আই ডি কার্ডের মধ্যে আশক আলী নিকাহনামায় আশই মিয়া বিদ্যমান থাকা তিনটি নামই একই ব্যক্তির। ২০১৬ সালে জফুরা বেগম সিলেট সদর উপজেলার ৭নং মোগলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডে ইউপি নির্বাচনে বিজয় লাভ করে কৃতিত্বের সাথে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। সবাই তাকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারী হিসাবেই জানে। জৈনক শফিকের সাথে ২০২৩ সালে একটি ফৌজদারী মামলার কপিতে হাত দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলীর স্থলে মহুরী ভুলবশতঃ মৃত ওয়ারিছ লিখে এতেই সুযোগ পেয়ে
উজা ওয়ারিছ আলী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সমাজে বিভ্রান্তির জন্ম দেন।
এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা কন্যা জফুরা বেগম অভিযোগ করে বলেন,এসব কিছুর “মূল হোতা” শফিকের কুমন্ত্রনায় গ্রাম্য উজা চাচা ওয়ারিছ আলী আবার ২০১৭ সালের ন্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোম্পানীগঞ্জ বরাবর,২য় বার আভিযোগ দাখিল করেন। বলে জানা যায়। যার অকাট্য প্রমাণাদি কাগজপত্রে বিদ্যমান রয়েছে। এতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আজিজুন্নাহার,তদন্তের দায়িত্ব দেন কৃষি অফিসার আব্দুল মতিন কে। এখানেও অভিযোগ ওঠেছে বড়সড় আর্থিক লেনদেনের। এসবের সহায়তা করেন অফিস সহকারী শামীম আহমদ।
আরো জানা যায়,তদন্তটি বেকিমুড়ারপাড় রনিখাই ইউ/পি চেয়ারম্যান এবং সদর উপজেলার গালমশাহ না হয়ে তদন্ত কর্মকর্তা অফিসে বসেই তদন্ত করলেন।এটার বিষয়ে জফুরা বেগম ও তার এলাকার চেয়ারম্যান ও রনিখাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান, সহ কেউই ওয়াকিবহাল নন। এদিকে অভিযুক্ত শামীম বিশাল অংকের টাকা গ্রাম্য উজা ওয়ারিছ এর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট পক্ষে দিবেন বলে কে চুক্তি ও করেন। এই অবস্থার মধ্যে জফুরা বেগম,আরও বেকায়দায় পড়ে যান।তখন সিলেট জজকোর্টের সিনিয়র আইনজীবীর শরনাপন্ন হলে তিনি গেজেট অনুপাতে নাম সংশোধনের পরামর্শ দেন। ২০১৭ সালের পরে জফুরা বেগম,কোন কল্পনা করেননি যে, সুচতুর উজা ওয়ারিছ আলী আবারো মীমাংশিত বিষয়টি দ্বিতীয় বার অভিযোগ করে হয়রানি করছেন। এবং জফুরা বেগম, নির্বাচন অফিসে নাম সংশোধনের দরখাস্থ করিলে ওয়ারিছ আলী তাতেও বাধা প্রদান করেন। এবং বিগত ২৬-০২-২০২৫ ইং প্রসেস নং-৬৯ এর মাধ্যমে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল হাছনাত, কোম্পানীগঞ্জ কর্তৃক একটি নোটিশ পান। ২০১৭ সালের যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল লাইছে’র ডাকে যে ভাবে সাড়া দেন। ঠিক তেমনি ভাবে ১০-০৩-২৫ তারিখে ভূমি অফিস কোম্পানীগঞ্জে উপস্থিত হলে জফুরা বেগমের, বা কোন স্বাক্ষীর জবানবন্দী না শুনেই ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা উজা ওয়ারিছ আলীর পক্ষে একতরফা রায় দেন। ৫০০ শত টাকা জরিমানা ও দিতে হয়েছে পরে জফুরা বেগম,জানতে পারেন এটা নাকি মোবাইল কোর্ট ছিল। বিগত রোজ শুক্রবার ৬-০৬-২০২৫ ইং তারিখে রহস্য উদঘাটনে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী আশই মিয়ার গ্রামের বাড়িতে গেলে জানা যায় আসল রহস্যময় ঘটনা, বেকিমুড়ারপাড় জামে মসজিদের সামনে এলাকার প্রবীণ মুরব্বিয়ান ও জনসাধারণের কথায় ওঠে এসেছে প্রকৃত তথ্য। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন (৫৫) জানান কথিত মুক্তিযোদ্ধা নামধারী গ্রাম্য উজা ওয়ারিছ আলী সে কোন মুক্তিযোদ্ধা নয়,একবার আমাদের গ্রামে একটি কাগজ নিয়ে এসে বলে সবাই স্বাক্ষর দিতে এলাকাবাসী তখন বুঝতে পারছেন।
এটা তাঁর অপকৈশল,তার বড় ভাই ওয়াছির আলী ওরপে আশই হলো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী শামীম আহমেদ কোন আর্থিক লেনদেনে জড়িত নন বলে জানান। মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার গ্রাম্য উজা ওয়ারিছ আলীর কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বলেন আমার সকল কাগজপত্র আছে কেউ আমার কিছুই করতে পারবেনা আমি আমার অবস্থানে সঠিক আছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছির আলী ওরপে আশই মিয়ার কন্যা জফুরা বেগমের জোর দাবি বিষয়টি অতি স্পর্শ কাতর অবহেলা এবং বিশাল বাণিজ্যের মাধ্যমে সত্যিকার একজন মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারী আমি আমাকে কে বঞ্চিত করে। বানোয়াট জাল জালিয়াতির মাধ্যেমে মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার উজা ওয়ারিছ আলীকে নতুন মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন যারা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্হা করে। নিরপেক্ষ ও গোপন উচ্চতর তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি উদঘাটন করে মুক্তিযোদ্ধাকে মুল্যায়ণ করা হোক,এবং যথাযথ,পদক্ষেপ নিয়ে চলমান জফুরা বেগমের বীর মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারী ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার পক্ষে তিনি বর্তমান সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, মহোদয় ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানান। এবিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুন্নাহার, এর কাছে জানতে চাইলে তিনি সময় টিভি বাংলা কে বলেন বিষয়টি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে।