নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটকে অপরধীদের হাত থেকে মুক্ত করতে নবাগত পুলিশ কমিশনার যখন জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স নীতি ঘোষনা করেছেন তখন ফাঁড়ি পুলিশের কিছু দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার সহযোগিতায় দক্ষিন সুরমায় চলছে জুয়ারীদের বেপরোয়া রামরাজত্ব।
সিলেটের অন্যতম আলোচিত জুয়াড়ী নজরুল ইসলাম, তিনি নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী বিআরটিসি কাউন্টারের পিছনের গলিতে দিনে রাতে জান্ডুমুন্ড, শীলংতীর নামক অনলাইন জুয়ার রমরমা প্রতারণা করে যাচ্ছেন। তাহার এই প্রতারণাকে সহযোগিতা করছে কদমতলী ফাঁড়ি পুলিশের আইসি এসআই সুমন।
কদমতলী ফাঁড়ির আড়ইশ গজ দুরত্বে নজরুলের জুয়ার বোর্ড চালাচ্ছে নজরুলের ছোট ভাই মাছুম। কদমতলী ফাঁড়ি পুলিশকে সপ্তাহে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে বিশ্বস্থ একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও ডিবির সোর্স পরিচয়দানকারী সানি সপ্তাহে ডিবির নাম ভাঙ্গিয়ে ৭ হাজার টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কদমতলী ফাঁড়ির ঠিক বিপরীতে ২০০ গজ দূরত্বে শতাদ্বী কমপ্লেক্স এর গেইটের ভিতরে আক্তারের জুয়ার বোর্ড। এই বোর্ডে শীলং তীর নামক অনলাইন জুয়ার রমরমা বাণিজ্য চলে। সেখান থেকে ফাঁড়ি পুলিশের নামে সপ্তাহে ১হাজার ২ শত টাকা আদায় করা হয় বলে জুয়ারী জানিয়েছে। এখানে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা চলে।
পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে ডগের পারে জুয়ারী রাজনের জুয়ার বোর্ড। সেখানে প্রতিদিন শীলং তীর নামক অনলাইন জুয়ায় ২ লক্ষ টাকার প্রতারণা চলে। এখান থেকে কদমতলী ফাঁড়ির আইসির নামে সপ্তাহে ২হাজার ২ শত টাকা, থানার ওসির নামে ২হাজার ৫ শত টাকা, রেলওয়ে থানার ওসির নামে সাপ্তাহিক ৫ হাজার টাকা এবং ডিবির নাম ভাঙ্গিয়ে সানি ৯ হাজার টাকা নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
কদমতলী যমুনা মার্কেটের বিপরীতে রেলওয়ের জায়গায় রায়েল নামের একব্যক্তি জুয়ার বোর্ড চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সে মোবাইলে শীলং তীর নামক জুয়ার বোর্ড চালায়। এই বোর্ডে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকার জুয়ার প্রতারণা চলে।
পলাশ নামের একব্যক্তি ও তার ছেলে একই জায়গায় শীলংতীর নামক অনলাইন জুয়ার বোর্ড চালায়। সেও শিলং তীর নামক অনলাইন জুয়ার প্রতারণা করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
আরেক জুয়ারী মনোহর, তিনি দৈনিক মোবাইলের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকার খেলা নেয়। সে শ্রমিক পরিচয়ে জুয়ার প্রতারণা দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। জুয়ার প্রতারণার মাধ্যমে ২/৩ টি গাড়ীর মালিক হয়েছে বলে বিশ্বস্থ একটি সুত্র জানিয়েছে।
এসব জুয়ারীরা তাদের কালেকশন করা খেলার টাকা দেয় শীষ জুয়ারী মজনুকে। সে কখনও যুবদলের ২৫ নং ওয়ার্ড সভাপতি, কখনও এম এ মালেক এর বাতিজা পরিচয়ে সমস্ত দক্ষিণ সুরমার জুয়ার অবৈধ প্রতারণা বাধাহীন ভাবে সামল দিচ্ছে। মজনুর নিজের একটি জুয়ার বোর্ড আছে দক্ষিণ সুরমার মেতর পট্টিতে। যেখানে মজনুর স্ত্রী রহিমা গাজার ব্যবসা করছে। রহিমা বড় গাজা ব্যবসায়ী। মজনুর ছোটভাই রুমন বিশিষ্ট ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং বড় ভাই হেরোইন সম্রাট বাবলা।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন মোবাইল কোট পরিচালনা করে নতুন রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ মূখে গড়ে উঠা এ সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছে, ফলে এখানে আপাদত জুয়ার বোর্ড চালানো কঠিন হবে। এই অভিযানে ৩/৪ টি জুয়ার বোর্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
ফলে একদিকে যেমন পুলিশ কমিশনারের মহত উদ্যোগ ও নির্দেশ বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। অন্যদিকে খেটে খাওয়া সাধরণ মানুষ প্রতারণার শিারণে পরিবারে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। পরিবারের বিশৃঙ্খলা কমাতে সাধারণ জুয়ারীরা জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে।
এব্যাপারে জানতে কদমতলী ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ এস আই সুমন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জুয়ার বোর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন যারা বলছে মিথ্যা বলছে, আমাদের অভিষান অভ্যাহত আছে, মাদক- জুয়ারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।
দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই বুলবুল এর সাথে মুঠোফোনে দদাযোগাযোগ করে জুয়ারী রাজনের জুয়ার বোর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আপনি থাকেন আসছি, আটক করতে পারেনি পুলিশ।
সচেতন মহলে মনে করেন এসব জুয়ার বোর্ড ও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যেতে পুলিশের পাশা-পাশি যৌথবাহিনীর হহস্তক্ষেপ জরুরী।